জেফরী এস পেরেরা আর নেই
কারিতাস বাংলাদেশের প্রাক্তন নির্বাহী পরিচালক জেফরী এস পেরেরা আর নেই।
১৩ ডিসেম্বর সকাল সাতটায় তিনি রাজধানীর সেন্ট জন ভিয়ানী হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এবং বাধক্য জনিত কারণে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স বয়স হয়েছিলো ৮৫ বছর।
ঢাকা ক্রেডিটের উপদেষ্টা জেফরী এস পেরেরা কারিতাস বাংলাদেশের তৃতীয় নির্বাহী পরিচালক ছিলেন। তাঁর আগে দুজন বিদেশি নির্বাহী পরিচালক ছিলেন। অন্যদিকে, তিনি প্রথম খ্রিষ্টভক্ত নির্বাহী পরিচালক। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি প্রথমে কারিতাস চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৭৬ থেকে ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ২৩ বছর কারিতাস বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন। তিনি ইতালির রুমের পন্টিফিক্যাল কমিশন ফর জাস্টিস একন্ড পিস-এর সদস্য ছিলেন। এশিয়ান পার্টনারশিপ ফর হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট-এর প্রথম সারির নেতা ছিলেন তিনি। কারিতাসে সেবা দেওয়ার আগে তিনি চট্টগ্রামের সেন্ট প্লাসিড উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন।
তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট পংকজ গিলবার্ট কস্তা ও সেক্রেটারি ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়া। তাঁরা বলেন, জেফরী এস পেরেরা ছিলেন একজন জ্ঞানী ও আলোকিত মানুষ। তিনি ছিলেন একজন স্পষ্টভাষী এনজিও নেতা। তিনি কারিতাসের মধ্য দিয়ে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য কাজ করেছেন। তিনি কারিতাসের কর্মএলাকায় অবকাঠামগত উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখেন। তাঁর সময়ে নির্মিত হয়েছে অনেক রাস্তাঘাট। প্রাকৃতিক দুর্যোগে তিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন দুর্গতদের পাশে।
মহাখালী গির্জায় ঢাকা ক্রেডিটের ট্রেজারার পিটার রতন কোড়াইয়া, ডিরেক্টর পাপিয়া রিবেরূ ও ঢাকা ক্রেডিটের উপদেষ্টা ইউজিন রিবেরু ও মাহাখালী সেবাকেন্দ্রের ম্যানেজার মিল্টন পিনারু ফুল দিয়ে জেফরী এস পেরেরার মর দেহে শ্রদ্ধা জানান।কারিতাস এশিয়ার প্রেসিডেন্ট ও কারিতাস বাংলাদেশের প্রাক্তন নির্বাহী পরিচালক ড. বেনেডিক্ট আলো ডি’রোজারিও ডিসিনিউজকে নিজের প্রাক্তন সহকর্মী সম্পর্কে বলেন, তিনি ছিলেন খুব ভালো ও নির্ভীক বক্তা। সাহস করে তিনি সব কথা বলতে পারতেন।ড. বেনেডিক্ট আরো বলেন, ‘তাঁর জীবনের দুটি গুণ আমার জীবনে ধারণ করেছি, সেগুলো হলো স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। মানবাধিকার আন্দোলনের সাথেও তিনি জড়িত ছিলেন।’কারিতাস বাংলাদেশের বর্তমান নির্বাহী পরিচালক ফ্রান্সিস রঞ্জন রোজারিও জেফরী এস পেরেরার মৃত্যুতে শোক জানান। তিনি বলেন, জেফরী এস পেরেরা দরিদ্র মানুষের ক্ষমতায়নে আন্তরিকভাবে কাজ করেছেন। কারিতাস বাংলাদেশের জন্য ফাদার টিমের পর তাঁর সবচেয়ে বেশি অবদান রয়েছে। তিনি ছিলেন তুখোর বক্তা। তিনি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় খুব ভালো বক্তব্য দিতেন। তাঁর বক্তব্য একবার কেউ শুনলে তা চিরদিন মনে রাখতেন।১৪ ডিসেম্বর সোমবার জেফরী এস পেরেরা মরদেহ চট্টগ্রামে সমাহিত করা হবে। দুপুরে কারিতাসের ন্যাশনাল অফিসে আনা হয় তাঁর মর দেহ। এই সময় কারিতাসের কর্মীরা শেষ শ্রদ্ধা জানান।কারিতাস বাংলাদেশে বর্তমানে ৯১টি প্রকল্প রয়েছে। এক হাজার ৫০০ জন স্বেচ্ছাসেবকসহ মোট কর্মী আছে ৬ হাজার।
সূত্র:ডিসিনিউজ