উজিরপুরে দুইশত বছরের পুরানো গির্জাঘর ভেঙে দিয়েছে প্রভাবশালীরা । Bangla Christian News
বরিশালের উজিরপুর উপজেলার প্রত্যন্ত জনপদ জল্লা ইউনিয়নের উত্তর মুন্সির তাল্লুক গ্রামে প্রায় দুইশত বছরের ঐতিহ্যবাহী ক্যাথলিক চার্চের একটি গির্জাঘর ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। বিশপ লরেন্স সুব্রত হাওলাদারের একক সিদ্ধান্তে দুইশত বছরের পুরনো গির্জাটি প্রভাবশালী মহলের সার্থহাসিলের উদ্দেশ্যে বিগত ২০ জানুয়ারি বুধবার ভেঙে ফেলা হয়। গির্জাঘর ভেঙ্গে দেওয়ায় রবিবার খোলা জায়গায় প্রার্থনা করছে এখানকার ১৬টি পরিবারের খ্রিষ্টভক্তরা। গির্জা ভাংচুরের এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঘটনার দিনই চার্চ ভুক্ত বিমলা হালদার ও ডলি গাইন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উজিরপুর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করলে, তাৎক্ষণিকভাবে উজিরপুর থানার এসআই কমল ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছে।
সরেজমিন ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুইশত বছর পূর্বে প্রয়াত হেমন্ত ভেদু গাইন, যদু গাইন তার সহোদর মধু গাইন তাদের পৈত্রিক সম্পত্তির ১৪ শতাংশ ভূমি গির্জাঘরের নামে দান করে। তখন একজন বিদেশী পুরোহিতের উদ্যোগে ওই স্থানে গির্জাঘর নির্মাণ করে প্রার্থনা শুরু করেন। সেই ধারাবাহিকতায় উত্তর মুন্সিরতাল্লুক ও এর গা ঘেষা ইন্দুরকানি গ্রামের ক্যাথলিক চার্চভুক্ত খ্রিস্টভক্তরা বংশ পরম্পরায় এই গির্জায় প্রার্থনা ও ধর্মীয়কার্য করে আসছে। অতি সম্প্রতি ইন্দুরকানি ক্যাথলিক চার্চের সভাপতি অসিম বাড়ৈ সম্পাদক সন্টু হালদার ও চার্চের অপর এক সদস্য সুভাষ বাড়ৈ এবং চার্চ সংশ্লিষ্ট কতিপয় সুবিধাবাদী ব্যক্তি প্রভাব বিস্তার করে চার্চের সদস্যদের মতামত উপক্ষো করে বহিরাগত লোকজন নিয়ে আচমকা গির্জাঘরটি ভাঙতে আসে। কিছু বুঝে উঠবার আগেই ভাঙচুরের কাজে মন্ডলির সাধারন সদস্যরা বাঁধা দিতে গেলে তাদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দিয়ে গির্জা ঘর ভেঙ্গে দেয় বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, স্থানীয় চার্চভুক্ত খ্রিষ্টধর্মালম্বী সুধির গাইন, ডলি গাইন, সুশিল হালদার, বিমলা রানী, সুমন গাইনসহ স্থানীয়রা। উল্লেখিত ব্যক্তিরা ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান অভিযুক্ত ব্যক্তিরা চার্চের ২-১ জন কর্তা ব্যক্তিদের যোগসাযোসে, তাদের কায়েমী স্বার্থ হাসিল ও আর্থিক সুবিধা ভোগ করতেই সুবিধাবাদীরা এই কাজ করেছে। এঘটনায় ইন্দুরকানি ক্যাথলিক চার্চের সভাপতি অসিম বাড়ৈর কাছে এ বিষয় জানতে চাইলে, তিনি বলেন : “গির্জাঘর ভেঙ্গে ফেলা বা নির্মাণ করা ক্যাথলিক চার্চের অভ্যান্তরীণ বিষয়। গির্জাঘর ভেঙ্গে ফেলায় তারা কোন অন্যায় করেনি।” এ বিষয়ে বরিশাল ডাইওসিসের প্রধান বিশপ লরেঞ্চ সুব্রত হাওলাদারের সাথে একাধীকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও, তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে এবং পরিদর্শককৃত এস আই কমল জানিয়েয়েছেন, “অভিযোগ পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়ে গির্জার সমস্ত মালামাল ক্রোক করে এসেছি। বিশপের সাথে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, তার একক সিদ্ধান্তে এটি করা হয়েছে। এ বিষয় আগামী ২৬ মার্চ থানায় এসে তিনি কথা বলবেন।”
সূত্র: আজকের পরিবর্তন