পুরান তুইতালের পল কোড়াইয়ার চল্লিশা অনুষ্ঠান সম্পন্ন (ছবি)
ঢাকা ক্রেডিটের ট্রেজারার পিটার রতন কোড়াইয়ার পিতা পল কোড়াইয়ার চল্লিশা অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে তাঁদের নবাবগঞ্জের পুরান তুইতালের বাড়িতে।
২১ নভেম্বর তাঁর চল্লিশা অনুষ্ঠানে পবিত্র খ্রিষ্টযাগ উৎসর্গ করেন হাসনাবাদ ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার স্যানিসলাস গমেজ। সাথে উপস্থিত ছিলেন তুইতাল ধর্মপাল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার পঙ্কজ প্লাসিড রড্রিক্স, শুলপুর ধর্মপাল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার লিন্টু ফ্রান্সিস কস্তা ও ডিকন লেনার্ড রোজারিও।
ঢাকা ক্রেডিটের ট্রেজারার পিটার রতন কোড়াইয়ার তাঁর বাবার চল্লিশাতে অতিথিদের আন্তরিকভাবে স্বাগত জানান।
চল্লিশা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ক্রেডিটের ভাইস-প্রেসিডেন্ট আলবার্ট আশিস বিশ্বাস, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) ও বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও, ঢাকা ক্রেডিটের সেক্রেটারি ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়া, বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের যুগ্ম মহা সচিব জেমস সুব্রত হাজরা প্রমুখ।
উপদেশ বাণীতে ফাদার স্ট্যানিসলাস বলেন, ‘আমাদের জীবনের জন্য অনেক ধন-সম্পদ অর্জন করি কিন্তু আত্মার জন্য ও ঐশ্বরাজ্যের জন্য কিছু করি না। তাই আজ ধ্যান করবো আমরা যখন চল্লিশা বা কারো মৃত্যুবার্ষিকী পালন করি, তখন আমাদের জীবনে যেন পরিবর্তন হয়।’ তিনি ঐশ^রাজ্যের জন্য সঞ্চয় করার পরামর্শ দেন।
ফাদার স্ট্যানিসলাস পল কোড়াইয়ার প্রশংসা করে বলেন, ‘আমি শুনেছি, পল কোড়াইয়া গোপনে মানুষকে দান করতেন। বিশেষ করে যাঁরা চিকিৎকার জন্য সাপ্তাহিক প্রতিবেশীতে সাহায্যের আবেদন করতেন, তাঁদের তিনি গোপনে টাকা পাঠাতেন। তাঁর এই মানবীয় গুণ আমাদের সকলের অনুসরণীয়।’
পল কোড়াইয়াকে নিয়ে স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে নির্মল রোজারিও বলেন, ‘মানুষ যখন মারা যায়, তখন তাঁর নিজের জন্য প্রার্থনার কোন সুযোগ নাই, তাই আমরা মৃতলোকের আত্মার কল্যাণে প্রার্থনা করবো। মধ্যস্থানে যদি পল কোড়াইয়া থেকে থাকেন তাহলে তিনি স্বর্গে যাবেন।’
পিটার রতন কোড়াইয়া ঢাকা ক্রেডিটের ট্রেজারার ও বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের বনানী শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করছেন উল্লেখ করে নির্মল রোজারিও বলেন যে রতনের বাবার চল্লিশাতে তাঁর মায়ের প্রতি ও তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও শোক জানাতে এবং প্রার্থনা করতে তারা সেখানে গিয়েছেন।
‘ধার্মীকের স্মৃতিচারণ আশীর্বাদের বিষয়। আজকের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান হচ্ছে আমাদের জন্য বিশেষ আশীর্বাদের। এই দিনে আমরা শিক্ষা নিতে পারি যে আমাদেরও একদিন চলে যেতে হবে। আমাদের যেন মধ্য স্থানে থাকতে না হয়। আমাদেরকে একেবারেই ঈশ্বরের কাছে যেতে হবে,’ বলেন ঢাকা ক্রেডিটের ভাইস-প্রেসিডেন্ট আলবার্ট আশিস বিশ্বাস। তিনি উল্লেখ করেন যে আমাদের সুযোগ আছে এই জগতে ভালো কাজ করে আমরা যেন পরকালের জন্য সঞ্চিত করি।
তিনি পল কোড়াইয়ার আত্মার চির শান্তি কামনা করে বলেন, পল কোড়াইয়া খুব আন্তরিক ছিলেন। তিনি আন্তরিকতার সাথে মানুষকে গ্রহণ করতেন।
এই ক্ষুদ্র জীবনে আমাদের ভালো কাজ করতে হবে উল্লখ করে ঢাকা ক্রেডিটের সেক্রেটারি ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়া বলেন, দরিদ্রদের যারা অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারে না, পল কোড়াইয়া গোপনে তাঁদের জন্য টাকা দিতেন। আমরা পল কোড়াইয়ার এই ভালো গুণসহ অন্যান্য গুণ আমাদের জীবনে চর্চা করতে পারি।
পরিবারের পক্ষে আরো স্মৃতিচারণ করেন মিলন ফেবিয়ান গমেজ ও সিস্টার মেরী প্রশান্ত এসএমআরএ।
প্রসঙ্গত ১৩ অক্টোবর বার্ধক্যজনিত রোগে নিজ বাড়িতে মারা যান পল কোড়াইয়া।চল্লিশা অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ক্রেডিটের ডিরেক্টর প্রত্যেশ রাংসা, আনন্দ ফিলিপ পালমা, ক্রেডিট কমিটির সদস্য লরেন্স পিটার গমেজ, সুপারভাইজরি কমিটির চেয়ারম্যান জন গমেজ, বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক থিওফিল রোজারিও, গুলশান ওয়াইএমসিএ শাখার প্রেসিডেন্ট শিপন রোজারিও প্রমুখ।
সূত্র:ডিসিনিউজ